যশোর জেলার অন্তর্গত মনিরামপুর উপজেলার দূর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নং বাহিরঘরিয়া গ্রামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮ই এপ্রিল ২০২২ ইং রোজ শুক্রবার রাত ৮ টায় সময় সান্তনা সরকার (৪০) নামে এক গৃহবধূ কীটনাশক পান করে।সাথে সাথেই তার স্বামী উত্তম কুমার সরকার তার স্ত্রীকে নিয়ে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হসপিটালে রেফার করেন। তার স্বামী উত্তম কুমার সরকার এর ভাষ্যমতে সেখানেই মৃত্যু বরণ করেন তিনি।নিহত গৃহবধূর ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে ও ১৩ বছর বয়সী একটা মেয়ে আছে বলে জানা যায়।

গোপন সূত্র জানা যায়,সান্তনা সরকারকে ওই একই গ্রামের মহির গাজী (৫০) বছর পিতার নাম জব্বার গাজী নামে একটি লোক স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার (সেলিম হোসেন )এর সহযোগী নানা ভাবে উত্যক্ত করতো এবং প্রায়ই তাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল।মহির গাজী এর কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে তার স্বামীকে ৯ নং ওয়ার্ড এর সদস্য সেলিম হোসেন এর সংশ্লিষ্টতাই চালের কার্ড ও ছেলেকে চাকরি দেওয়ার মতো সোনালী স্বপ্নও দেখান তিনি।কিন্তু এত কিছুর পরেও যখন ভুক্তভোগী ওই নারী সান্তনা সরকারকে মহির গাজী বাগে ফেলতে পারেনা তখন তিনি সান্তনা সরকারকে রাস্তা ঘাটেই ডিস্টার্ব করতে থাকেন।এবং প্রায়ই তাকে মোবাইল এ কল দিয়ে রাতের বেলায় তাকে ঘরের বাইরে বের হওয়ার জন্য বলতো।

নিহতের স্বামী উত্তম সরকার জানান,আমি যখন থেকেই আমার স্ত্রীর মুখে মহিরের সম্পর্কে এইসব কথা শুনেছি তখন থেকেই আমাদের মেম্বার সেলিম হোসেন কে সব জানিয়েছি কিন্তু তিনি আমাদের কোনো প্রকার সহায়তা না করে আমাদের সবাইকে বিষয়টি ধমাচাপা দেওয়ার কথা বলে।আর আমরা যদি এই নিয়ে কোন শালিস বিচার করি তাহলে মহির আমি,আমার বউ সহ স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে কেটে ফেলবে বলে হুমকি দিত।

তিনি আরো বলেন আমার স্ত্রীর আত্মহত্যার জন্য এই মহির গাজীই দায়ী।মহির উদ্দিন কে যদি আমাদের মেম্বার সাহেব সেলিম হোসেন মদদ না দিত তাহলে ও এত বাড়াবাড়ি করতে পারতো না।এই আমি সঠিক বিচার চাই।

আরো জানা যায় মহির উদ্দিন গাজী এর আগেও এইরকম আরো অনেক ঘটনার খলনায়ক।এর আগে ওই গ্রামের মুছা গাজী নামে একজন তার বিরুদ্ধে বাদী হয়ে এই একই ঘটনার জন্য থানায় ডাইরি করেন।

নিহতের ছেলে আমাদের “কলমকথা” কে জানান আমার মা যখন থেকেই আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে আমি তখন থেকেই আমার মায়ের ফোনে কল রেকর্ডিং চালু করে রাখি।আমার মায়ের সাথে সবসময় কুপ্রস্তাব, হুমকি ধামকি দেওয়া সকল কথার রেকর্ডিং আমার কাছেই আছে।আমরাও সেটা ও তাদের বক্তব্য ভিডিও রূপে সংরক্ষণ করেছি।

নিহতের স্বামী ছেলে প্রতিবেশী সকলের দেওয়া ভিডিও তথ্যের উপর ভিত্তি করে বলা যেতে পারে এটা নিছক কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয়, এটা নিশ্চয় একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

বিষয়টি নিয়ে মহির উদ্দিন গাজীর সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে বাড়ির কেউ জানে না বলে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।আর মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে গেলেই তার ব্যাবহৃত নম্বর টি বন্ধ পাওয়া যায়।

সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে এলাকাবাসী “কলমকথা”কে জানান মহির গাজী আমাদের মেম্বার সেলিম হোসেন এর মদদে আর আগেও এই কাজ অনেকবার করেছে। কিন্তু আমরা ভয়ে কিছুই বলতে পারিনা, শালিস বিচার ডাকতে পারিনা। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক একটা সঠিক বিচার এর আশাবাদ ব্যাক্ত করেন সবাই।